সদ্য জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিকের ১৪ হাজার শিক্ষক পড়েছেন বিপদে। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়। তিন ধাপে এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। প্রথম ধাপের প্রায় ২৩ হাজার বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নির্দিষ্ট সময়ের কিছু পরে তাঁদের বেতন-ভাতা পাওয়া শুরু করলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের শিক্ষকরা এখনো তা পাচ্ছেন না। তিন হাজারের বেশি বিদ্যালয়ের প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষক চার বছর ধরে সরকারি চাকরি করেও বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
জানা যায়, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়গুলো মূলত কমিউনিটি স্কুল, এনজিও, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের অধীনে ছিল। শিক্ষকরা আগে অল্প হলেও মাসিক বেতন পেতেন। এনজিও পরিচালিত ও কমিউনিটি স্কুলগুলোর বেতন-ভাতা ছিল নিয়মিত। কিন্তু চার বছর আগে জাতীয়করণের ঘোষণার পর স্কুলগুলো সরকারের অধীনে চলে যায়। তখন থেকেই তাঁদের বেতন-ভাতা বন্ধ।
ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী রিজিয়া-রশীদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইকরামুল হক বলেন, ‘আমরা খুবই অসহায় অবস্থায় জীবন যাপন করছি। বেতন পাব পাব বলে চার বছর পার হয়ে গেল। পরিবার-পরিজনের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। আগে মানুষের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে চলেছি। এখন আর কেউ ধার দিতে চায় না। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, যেন দ্রুত আমাদের বেতন ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপের শিক্ষকদের গেজেট আমরা প্রকাশ করেছি। কিন্তু তাতে ভুলত্রুটি ধরা পড়েছে। আগে একজন একভাবে তথ্য দিয়েছেন, এখন অন্যভাবে। এখন তা সংশোধনের কাজ চলছে। আমরা চাই না কোনো ভুল থাকুক। তাহলে ভবিষ্যতে আরো বড় সমস্যা সৃষ্টি হবে। তাই সংশোধনের কাজটা নির্ভুলভাবে করার চেষ্টা করছি। সংশোধন শেষ হলেই তাঁরা সরকারি বেতন পাবেন। তবে কবে শেষ হতে পারে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। আর তৃতীয় ধাপের শিক্ষকদের পদ সৃষ্টির কাজ চলছে। তাঁদের বেতন পেতে বেশ সময়ের প্রয়োজন।’
সূত্র জানায়, ২৬ হাজার ১৯৩টি বিদ্যালয়ের এক লাখ তিন হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষকের চাকরি তিন ধাপে সরকারীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপের শিক্ষকদের চাকরি ২০১৩ সালেরই জানুয়ারি থেকে, দ্বিতীয় ধাপের একই বছরের জুলাই থেকে এবং তৃতীয় ধাপের শিক্ষকদের চাকরি ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে সরকারীকরণের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। প্রথম ধাপের ২২ হাজার ৯৫৬টি বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের গেজেট প্রকাশিত হয় ২০১৩-এর ফেব্রুয়ারিতে। এর কয়েক মাস পরই ওই বছরের মে মাসে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি সরকারিকরণ হয়। প্রথম ধাপের শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ প্রায় ঠিক সময়েই সম্পন্ন হয়। এরপরই সৃষ্টি হয় জটিলতা। ২০১৩ সালের নভেম্বরে দ্বিতীয় ধাপে দুই হাজার ২৫২টি স্কুল, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে তৃতীয় ধাপের একাংশ ৫৫৭টি স্কুল জাতীয়করণ হয়। এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষকের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাত্ তাঁরা সরকারি চাকরি করছেন। এর পরও তাঁরা সরকারি বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। আর তৃতীয় ধাপের শিক্ষকদের পদ সৃজনের কাজ চলছে।
গত ৮ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভায়ও জাতীয়করণ হওয়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রদানে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রথম ধাপের ১৫০টি, দ্বিতীয় ধাপের ১০৫টি এবং তৃতীয় ধাপের ৪১৩টি স্কুল এখনো জাতীয়করণের বাইরে রয়ে গেছে। যেসব স্কুল জাতীয়করণ হচ্ছে না সেগুলোতে মূলত পাঁচ ধরনের সমস্যা পাওয়া গেছে। সেগুলো হচ্ছে—স্কুলের জমি নিয়ে জটিলতা, আগের কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র নেই, ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক সমাপনীতে অংশ নেয়নি, ভুঁইফোড় স্কুল ও শিক্ষক নিয়োগে জটিলতা। এগুলো কিভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়েও কাজ চলছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈষান গোপালপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আকলিমা বেগম বলেন, ‘চাকরি সরকারি হয়েছে এটা ভেবে যতটা আনন্দ পেয়েছি বেতন পাওয়ার দীর্ঘ অপেক্ষায় এখন দ্বিগুণ কষ্টে দিন পার করছি। প্রথম ধাপের স্কুলগুলোর শিক্ষকরা বলতে গেলে সঙ্গে সঙ্গেই সরকারি বেতন পাওয়া শুরু করলেন। অথচ আমরা চার বছর ধরে পাচ্ছি না।’
জানা যায়, জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেয়ে পিছিয়ে আছে। তাদের বেশির ভাগ শিক্ষকেরই প্রশিক্ষণ নেই। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতার দিক দিয়েও তাঁরা পিছিয়ে। তার পরও বছরের পর বছর বেতন না পাওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। পরিবার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে মন দিতে পারছেন না। এতে পিছিয়ে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা।
জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘প্রথম ধাপের সব স্কুলই ছিল রেজিস্টার্ড। এসব স্কুলের শিক্ষকদের সমিতি ছিল। তাঁরা নানা জায়গায় তদ্বির ও যোগাযোগ করতে পেরেছেন। ফলে সহজেই তাঁরা সরকারি বেতন পেয়েছেন। কিন্তু আমরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের শিক্ষকরা ঐক্যবদ্ধ নই। আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগও করতে পারছি না। আমরা সর্বোচ্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস পর্যন্ত যেতে পারি। কিন্তু সেখান থেকে আমাদের কিছুই জানাতে পারে না। ফলে আমরা খুব যন্ত্রণার মধ্যে দিন পার করছি। কবে নাগাদ বেতন পেতে পারি তার সদুত্তরও কেউ দিতে পারছেন না।’
সাবেক বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির একাংশের মহাসচিব মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘একসঙ্গে ২৬ হাজার বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়েছে। প্রথম ধাপের শিক্ষকরা অনেক আগে থেকেই বেতন পেতে শুরু করেছেন। অথচ অন্যরা পাচ্ছেন না। প্রতিদিনই শিক্ষকরা ফোন করে জানতে চান কবে থেকে তাঁরা বেতন পাবেন। আমরা কোনো উত্তর দিতে পারছি না। আমি মন্ত্রণালয়কে বলব, যেসব স্কুলের সমস্যা আছে সেগুলো স্থগিত রেখে যেগুলোর কোনো সমস্যা নেই সেসব স্কুলের শিক্ষকদের সরকারি বেতন-ভাতা যেন দ্রুত চালু করা হয়।’
Buying Clobetasol Tablets Amex Overnight Shipping Where To Purchase Amoxicillin Amoxil Reaction Allergique viagra online Lilly Cialis Coupon
Dove Posso Acquistare Cialis Generico online pharmacy Low Testosterone Bph Propecia Zithromax Crushed Priligy 30 Mg Ohne Rezept
Zithromax Online Uk isotretinoin cheap internet with free shipping over night cialis Sage And Propecia Cialis Generico Vendita In Italia Venta Cialis Espana
Lasix Drug Interaction Amoxicillin With Out Rx viagra Cialis Viagra Levitra Comparaison Potenzmittel Viagra Test
Kamagra 100mg Sildenafil Oral Jelly viagra Buy Tadalis Sx 100 Mg Side Effects Amoxicillin Children’S Dosage For Amoxicillin
Cialis et insuffisance cardiaque cialis without prescription Generico Cialis Farmacia Keflex Conjunctivitis