২০০৯ সাল অর্থাৎ মাত্র সাত বছর আগেও শাপেকোয়েন্সে ক্লাবের নাম ব্রাজিলে খুব কম মানুষই জানতো। ব্রাজিলে চতুর্থ বিভাগে খেলত তারা। কিন্তু গত তিন বছর ধরে ক্লাবটি ব্রাজিল এমনকি দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম শক্তিধর ক্লাব হিসাবে বিবেচিত হতে থাকে।
বুধবারের (৩০ নভেম্বর) যে টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে তারা কলম্বিয়া যাচিছলো, সেটি দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় শীর্ষ ক্লাব টুর্নামেন্ট। ইউরোপের উয়েফা কাপের মত। শাপেকোয়েন্সে ক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ম্যাচ হতো বুধবারের ম্যাচটি।
ব্রাজিলের দক্ষিণের শহর শাপেকোর এই ক্লাবটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। কিন্তু সাফল্য পেতে কয়েক দশক লেগে যায়। ২০১৪ সালে এসে শাপেকোয়েন্সে ব্রাজিলের সিরি আ অর্থাৎ শীর্ষ লীগে উত্তীর্ণ হয়।
বিবিসির ব্রাজিল ভাষা বিভাগের ফার্নান্দো দুয়ার্তে বলছিলেন, “তাদের গল্প অসামান্য একটি রূপকথা, কিন্তু সেই রূপকথার এখন করুণ এক সমাপ্তি হলো।”
দুয়াতে বলেন, ‘ইংল্যান্ডে যেমন লেস্টার সিটি, দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলে তেমন সাফল্য পেয়েছিলো ছোট এই ক্লাবটি।”
বিধ্বস্ত বিমানটিতে দলের সব খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফ এবং বেশ কজন কর্মকর্তা ছিলেন। তাদের মধ্যে প্রাণে বাঁচতে পেরেছেন মাত্র তিনজন – দুই ডিফেন্ডার অ্যালান রাচেল এবং হেইলো নেটো, এবং গোলকিপারদের একজন জ্যাকসন ফোলম্যান। তবে প্রাণে বাঁচলেও, আর কখনো হয়তো তারা মাঠেই নামতে পারবেন না। অর্থাৎ ৪৩ বছর পর আবার নতুন করে শুরু করতে হবে শাপেকোয়েন্সে ক্লাবকে।
ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশন সাতদিনের শোক ঘোষণা করেছে। এই সাতদিন ব্রাজিলে সমস্ত ফুটবল বন্ধ থাকবে। সরকারও তিনদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে। ফুটবল বিশ্বের নামীদামী সব তারকা শোক প্রকাশ করেছেন। ট্রেনিং শুরু আগে রিয়েল মাদ্রিদ এবং বার্সিলোনা দল এক মিনিটের নীরবতা পালন করেছে।
লিওনেল মেসি লিখেছেন, “শাপেকোয়েন্সের সমর্থক, নিহত আহতদের পরিবারের প্রতি আমার গভীরতম সহমর্মীতা…।”
ইংল্যান্ড ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অধিনায়ক ওয়েন রুনি লিখেছেন, “বিমানে যারা ছিলেন তাদের পরিবারের লোকজন যেন শক্তি অর্জন করতে পারে —তার জন্য আমি প্রার্থনা করছি।”