জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার প্রথম দিন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ রাজধানীর ধানমণ্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে বাইরে বেশ কয়েকজন অভিভাবক তার কাছে এই দাবি জানান।
পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করে তাদের ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
দেশের দুই হাজার ৭৩৪টি কেন্দ্রে মঙ্গলবার একযোগে শুরু হয়েছে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা, যাতে অংশ নিচ্ছে ২৪ লাখ ১২ হাজার ৭৭৫ জন শিক্ষার্থী। প্রথম দিন সকাল ১০টায় জেএসসিতে বাংলা প্রথমপত্র এবং জেডিসিতে কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের পরীক্ষায় বসেছে শিক্ষার্থীরা।
সকাল সাড়ে ৯টায় ধানমণ্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে যান শিক্ষামন্ত্রী। কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
একজন অভিভাবক মন্ত্রীকে বলেন, “মাননীয় মন্ত্রী যারা প্রশ্ন ফাঁস করে তাদের ধরে সরাসরি ফাঁসি দিয়ে দেন, এরা দেশের বড় রাজাকার।” তার দাবির প্রতি সমর্থন জানান আরও কয়েকজন অভিভাবক।
নাহিদ বলেন, “প্রশ্ন ফাঁসরোধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করি আর প্রশ্ন ফাঁস হবে না। তবে আপনারা কেউ ভুয়া প্রশ্নপত্রের পেছনে ছুটবেন না।”যারা ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করে তাদেরও ধরে ফাঁসির দাবি জানান আরেকজন অভিভাবক। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান অভিভাবকরা।
একজন অভিভাবক মন্ত্রীকে বলেন, “এটা ভালো সিদ্ধান্ত। পরীক্ষার্থীরা আগেই খাতায় রোল নম্বরসহ অন্য তথ্য পূরণ করে ঠিক সময়ে লেখা শুরু করতে পারবে।”
কথা রেখেছেন মন্ত্রী
আগে দলবল নিয়ে পরীক্ষাকক্ষে ঢুকে সমালোচিত শিক্ষামন্ত্রী এবার শুধু মন্ত্রণালয়ের সচিব সোহরাব হোসাইনকে নিয়ে অল্প সময়ের জন্য পরিদর্শনে যান। গণমাধ্যমকর্মীরা কক্ষের জানালা দিয়ে ছবি তোলেন।
গত ৩১ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার সার্বিক বিষয় তুলে ধরার সময় মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলেও দলবল নিয়ে আর পরীক্ষাকক্ষে ঢুকবেন না তিনি।
কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে নাহিদ বলেন, “পাবলিক পরীক্ষায় আমরা বিভিন্ন পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখি ছেলেমেয়েরা কেমন পরীক্ষা দিচ্ছে, আয়োজনটা কেমন হয়েছে, কোনো সমস্যা আছে কি না, অসুবিধা আছে কি না?”
দুই বছর থেকে দলেবলে আর পরীক্ষাকক্ষে যান না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “মিডিয়া অনেকে বেড়ে গেছে, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সবাইকে নিয়ে গেলে ছেলেমেয়েদের অসুবিধা হয়।“অনেককেই জিজ্ঞাসা করেছি, তারা খুবই খুশি। তারা মনে করে প্রশ্ন ভালো হয়েছে, ভালো উত্তর দিতে পারবে।”
মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। ফেইসবুকে প্রশ্ন ফাঁস সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো খবর পেলে বিটিআরসি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে।
পরীক্ষার সময় ফেইসবুক বন্ধ রাখার প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, “এটাকে বন্ধ করে দেওয়া… যে অবস্থা হয়েছে কারও কারও সমস্যা, অসুবিধা হতে পারে। তাই এটাকে অন রেখেই আমরা কন্ট্রোল করতে পারি।…আর প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে নাই বললেই চলে।”
তিনি জানান, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে এসেছে। ১৫ মিনিট আগে খাতা পেয়ে তারা তথ্য পূরণ করেছে। মূল পরীক্ষা থেকে ওই সময় বেঁচে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা খুশি।
আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।